ভারত দেশ নিজের প্রাচীন সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিক জ্ঞানের জন্য বিশ্বে সবথেকে বড়ো স্থানের অধিকারি। ভারতের ঋষি, মুনি ও সাধু সন্ন্যাসীরা বার বার জ্ঞানের আলোয় বিশ্বকে আলোকিত করেছে। ভারতের প্রতিটি কোনে সময়ে সময়ে মহান আত্মা জন্ম নিয়ে ভারতের সনাতন সংস্কৃতির বিকাশ করেছে। শ্রী রামকৃষ্ণ থেকে শুরু করে ঋষি অরবিন্দর মতো মহান শক্তি ভারতভুমিকে আধ্যাত্মিক দিক থেকে সমৃদ্ধশালী করেছে।
সনাতন ধর্মের গৌরবগাথাকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতে এবং হিন্দুদের একত্রিত করার জন্য বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দের নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এমনি এক মহান সন্ন্যাসী ছিলেন অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ। যার খ্যাতি বিশ্বজুড়ে সেভাবে না ছড়ালেও তার কাজ আজও ভারতীয়দের গর্বিত করে।

অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী শীলা প্রভুপাদ (Srila Prabhupad) বঙ্গভূমিতে জন্ম নিয়েছিলেন। ছাত্রবস্থায় অত্যন্ত মেধাবী অভয়চরণ দে প্রথম থেকেই কট্টর ইংরেজ বিরোধী ছিলেন। সাংসারিক জীবন কাটানোর সময় হটাৎ গুরুর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সন্ন্যাস জীবনের পথে হাঁটা শুরু করেন। অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ ইংরাজি ভাষায় খুবই দক্ষ ছিলেন। এর কারণে এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে উনার গুরুদেব নির্দেশ দেন ভারতীয় সংস্কৃতিকে বিশ্বে প্রচার করার।
সেই কাজে নেমে পড়ে এই ভারতীয় সন্ন্যাসী এমন কিছু অদ্ভুত কাজ করেন যা বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে অকল্পনীয় মনে হয়। অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ (Abhay Charanaravinda Bhaktivedanta Swami) হরে কৃষ্ণ আন্দোলন শুরু করেন যা আমেরিকার নিউ জার্সি শহর থেকে শুরু করে পুরো আমেরিকা এবং পরে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। কোনো সরকারের কোনো সাহায্য ছাড়াই, কোনো ফান্ডিং ছাড়াই প্রভুপাদ বিশ্বজুড়ে ১০৮ টি হিন্দু মন্দিরের নির্মাণ করেন। প্রভুপাদ সেই ব্যাক্তি যিনি ইসকনের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ইসকনের প্রায় ৮০০ টি মন্দির রয়েছে। প্রভুপাদের দক্ষতার দরুন পাকিস্তানেও ইসকনের ১২ টি মন্দির রয়েছে। সাংসারিক জীবন ত্যাগ এই পর বৃন্দাবনে গুরুর আশির্বাদ নিয়ে পকেটে মাত্র কিছু ডলার নিয়ে আমেরিকার উদ্যেশে রওনা হয়েছিলেন প্রভুপাদ। সেই সময় আমেরিকা ভিয়েতনামের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। অন্যদিকে আমেরিকায় হিপ্পিসদের উপদ্রব চরমে ছিল। হিপ্পিসরা মূলত চুরি, ডাকাতি, নেশা ইত্যাদি নানা কুকর্মে সারাদিন লিপ্ত থাকতো। আমেরিকার সরকার হিপ্পিসদের নিয়ন্ত্রণে ব্যার্থ হয়ে পড়েছিল।
সেই সময় প্রভুপাদ হিপ্পিসদের নেতৃত্ব দেন এবং সকলকে হরি ভক্ত করে দেন। খুব শীঘ্রই উনি প্রায় ১০ হাজার শিষ্য করে নেন। শিষ্যদের উনি বিশ্বের নানা প্রান্তে পাঠিয়ে দেন এবং সেখানে কৃষ্ণনামের প্রচারে পাঠান। সেই সময় স্বামী প্রভুপাদ প্রায় ৫ কোটি বই বিশ্বজুড়ে বিতরণ করেন। বলা হয় প্রভুপাদ মাত্র ২ ঘন্টা ঘুমাতেন বাকি ২২ ঘন্টা সেবা করতেন। এই মহান সন্ন্যাসীর কারণেই আজ বিশ্বজুড়ে গীতার প্রচার এত তীব্র হয়েছে।
from India Rag https://ift.tt/2XZ6J22
Bengali News