স্বাধীনতার নকল ঠিকাদারেরা কখনো চাইতেন না যে পুরো বিশ্ব জানুক যে তারা কে ছিলেন… কেন এদের ভগবান বলা হতে লাগলো ? যদি এটার সত্যি তারা বলে দিত তবে ওনাদের নকল ঠিকাদারের কি হতো… কামান বা বন্দুকের আগে নিজের বুক কে দৃঢ় রেখে তীর দ্বারা যারা বন্দুক ধ্বংস করে দেয় যারা তাদের ভগবান বলবে নাতো কি বলবে। এবার প্রশ্ন হচ্ছে যে যদি স্বাধীনতা চরখা ঘুরিয়ে, অহিংসার বাণী দিয়ে আসে তবে ইংরেজদের বুকে দাগ করা বিরসা মুন্ডার তীর কিসের প্রতীক। নকল কলমকার বা ঝোলাছাপ ইতিহাসকারের দ্বারা করা ক্ষমার অযোগ্য পাপের দরুন আজ ৯৯% ভারতীয় আসল ইতিহাস থেকে অবগত নয়। দালাল বামপন্থী ইতিহাসবিদরা বইয়ের পাতা থেকে বাদ দিয়েছে বিরসা মুন্ডার (Birsa Munda) বীরত্বের কাহিনী।
ভগবান রামের ভক্ত মহাযোদ্ধা বিরসা মুন্ডা ১৯ শতকের একজন প্রমুখ আদিবাসী জননায়ক ছিলেন। ওনার নেতৃত্বে আদিবাসীরা ১৯ শতকের শেষ বছরে আদিবাসীদের মহান আন্দোলনকে শেষ অব্দি নিয়ে গেছিলো ও ব্রিটিশ সরকারের ভীতকে নড়িয়ে দিয়েছিল। বিরসা মুন্ডাকে না শুধু আদিবাসী সমাজ নয়, পুরো ভারতের রাষ্ট্রবাদী লোকেরা উনাকে একজন ভগবান হিসাবে পূজা করে কারণ কামান কে তীর দিয়ে শান্ত করার যুদ্ধ কৌশল শুধু দেবতা ও বিরসা মুন্ডারই ছিল। পিতা সুগনা মুন্ডা ও মাতা করমি হাতু র পুত্র বিরসা মুন্ডার জন্ম ১৫ই নভেম্বর ১৮৭৫-এ ঝাড়খন্ড প্রদেশ মঙ্গরাচির অলিহাতু গ্রামে হয়েছিল।
সালগা গ্রামে প্রাথমিক পড়াশোনার পর তিনি চাইবাসা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়তে যান। এনার মন সবসময় ব্রিটিশ শাসক দ্বারা হওয় অত্যাচারের কথা ভাবতে থাকতো। উনি মুন্ডা লোকেদের ইংরেজদের থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজের নেতৃত্ব প্রদান করেছিলেন। ১৮৯৪-এ মানশুনের ছোট নাগপুরে বার্থ হওয়ার কারণে মারাত্মক আকাল ও মহামারী ছড়িয়ে ছিল। বিরসা পুরো মনোযোগ দিয়ে নিজেদের লোকেদের সেবা করেছিল। ১ অক্টোবর সাল ১৮৯৪-এ যুবক নেতা রূপে সব মুন্ডাদের একত্র করে ইনি ইংরেজদের থেকে কর ক্ষমা করে দেওয়ার আন্দোলন করেছিলেন। এটিকে অপরাধ হিসাবে ধরে ১৮৯৫ তে ওনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ও হাজারীবাগ কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই বছরের কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিরসা মুন্ডা ও তার শিষ্যরা এলাকার আকাল পীড়িত জনতাদের সাহায্য করবে তা নির্ধারিত করে নিয়েছিল আর নিজের জীবনকালে তিনি মহাপুরুষের মর্যাদা পেয়েছিলেন।
ওনাকে সেই এলাকার লোকেরা ‘ ধারটি বাবা’ এই নামে ডাকত ও পুজো করা হতো। ওনার প্রভাবের বৃদ্ধির পর পুরো এলাকায় মুন্ডাদের মধ্যে সংগঠনিক হওয়ার ইচ্ছা জেগেছিল। ১৮৯৭ থেকে ১৯০০-র মধ্যে মুন্ডা ও ইংরেজ সিপাহিদের মধ্যে যুদ্ধ হতে থাকে ও বিরসা আর তার প্রিয়জনেরা ইংরেজ দের জ্বালিয়ে মারছিল। আগস্ট ১৮৯৭-এ বিরসা মুন্ডা ও ওনার চারশো দেশ ভক্ত ক্রান্তিকারী সিপাহীরা তিনটি কামান দ্বারা সজ্জিত হয়ে খুঁটি থানায় ধাবা দিয়েছিল। ১৮৯৮-এ নাগানদীর ধারে মুণ্ডাদের লড়াই ইংরেজ সেনাদের সঙ্গে হয়েছিল, যাতে ইংরেজ সেনারা প্রথমে তো মুণ্ডাদের কাছে হেরে যায় কিন্তু পরে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য মুন্ডারা হারতে শুরু করে। ওই এলাকার বহু আদিবাসীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এই গ্রেপ্তারকারী লোকেদের মধ্যে সেই সব বিশ্বাসঘাতককারী হিন্দুস্তানি সিপাহীরা ছিল যারা মেডেল ও বেতনের জন্য নিজেদেরই দেশের লোকেদের উপর গুলি চালাচ্ছিলেন।
জানুয়ারি ১৯০০ ডোমবারি পাহাড়ে আরেকটি সংঘর্ষ হয়েছিল যেখানে অনেক মহিলা ও বাচ্চারা মারা গেছিল… কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো ইতিহাসে কখনো ওই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করা হয়নি, বিশেষ করে ওনাদের দ্বারা যে দিন রাত গৌ রক্ষকদের উপর নজর লাগিয়ে বসে থাকতো ও তাদের গুন্ডা বানানোর একটিও সুযোগ ছাড়তো না, ওই জায়গায় বিরসা মুন্ডা নিজের জনসভাদের সম্ভাষণ করছিল। পরে বিরসা মুন্ডার কিছু শিষ্য গ্রেপ্তারও হয়। শেষে স্বয়ং বিরসাকেও ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯০০ তে চক্রধরপুরে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এই গ্রেপ্তারির পেছনেও দেশের কোনো বেইমানের হাত ছিল যারা ইংরেজদের হয়ে দালালি করতো।
জেলও বিরসা মুন্ডার অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেনি। নৃশংস বা অন্তহীন প্রতারণা দেওয়া হতে লাগলো জেলে তাকে কিন্তু তাও উনি ভেঙে পড়েনি। ভয়ানক বিশাসঘাতকতা চলাকালীন আজকের দিনে অর্থাৎ ৯জুন ১৯০০-এ রাচি কারাগারে ভগবান স্বরূপ বিরসা মুন্ডা নিজের অন্তিম স্বাস নেন আর সদা সর্বদার জন্য অমরত্ব প্রাপ্ত করে নেন। আজ ৯ জুন সেই সব মহানায়কের বলিদান দিবসে উনাকে বারবার স্মরণ করে ওনার মহান বীরত্বকে অমর রাখার সংকল্প India Rag পরিবার নিলো।
from India Rag Bengali : Bengali News, Bangla News, latest bengali news, Bangla Khobor, Bangla, বাংলা খবর http://bit.ly/2K4niUZ
Bengali News