ভারতের ইতিহাস পাঠ্যপুস্তক মুঘল রাজাদের কাহিনীতে পরিপূর্ণ। ইতিহাস বইতে মুঘল রাজাদের বেশি মহান হিসেবে দেখানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু ভারতীয় হিন্দু রাজাদের সম্পর্কে কিছুই পড়ানো হয় না। অনেকে মনে করে যে মুঘল শাসনের পর ইংরেজ শাসন চলে এসেছিল। এই ধারণাও ভুল ইতিহাস পড়ার ফল। আসলে মুঘল শাসনকে উপড়ে ফেলার পর হিন্দু রাজরা দেশে ধীরে ধীরে হিন্দু সংস্কৃতির বিকাশ করতে শুরু করেছিল। যার কিছু সময় পর ইংরেজরা ব্যাবসার সূত্রে এসে ভারতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিল। আজ এমন এক হিন্দু রাজার জন্ম জয়ন্তী যার সম্পর্কে ভারতের যুব সমাজ তথা ছাত্র সমাজকে খুব কম জানানো হয়।
যখন মুঘলদের কাছে ভারত পরাধীন হয়ে পড়েছিল ঠিক সেই সময় মহারান প্রতাপ (Maharana Pratap) ভারত ভূমির একাংশকে স্বাধীন রাখার জন্য লড়াই জারি রেখেছিলেন। মহারানা প্রতাপ এমন এক রাজা ছিলেন যিনি মুঘলদের রাতের ঘুম কেড়ে নিতেন।মহারানা প্রতাপ প্রায় ৭ ফুট ৫ ইঞ্চি লম্বা ছিলেন। এবং তিনি প্রায় ১১০ কেজির কবচ পরতেন, কিছু জায়গায় কবচের ওজন ২০৮ কেজিও লেখা আছে। তিনি ২৫-২৫ কেজির ২টি তলোয়ারের ভিত্তিতে যে কোনও শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন।
তাঁর কবচ ও তরোয়ালগুলি রাজস্থানের উদয়পুরের একটি যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। মহারাণাকে ভারতের প্রথম মুক্তিযোদ্ধাও বলা হয়, কারণ তিনি কখনই আকবরের কাছে আত্মসমর্পণ করেননি। তিনিই একমাত্র রাজপুত যোদ্ধা ছিলেন যিনি আকবরের চোখের ঘুম উড়িয়ে দিয়েছিলেন।
১৫৮২ সালে মহারানা প্রতাবের দিবের যুদ্ধ খুবই খ্যাত রয়েছে রাষ্ট্রবাদীদের মধ্যে। সেই যুদ্ধ শুরু হয়েছিল বিজয়া দশমীর দিন। মা দুর্গার আশীর্বাদ নিয়ে মা ভবানীকে স্মরণ করে শুরু হয় মুঘল বিনাশের পর্ব তথা ভীষণ যুদ্ধ। মহারান প্রতাপের ছেলে অমর সিং তারা বল্লভ মুঘল সেনাপতির উপর এত শক্তির সাথে ছোড়েন যে ঘোড়া সহ সেনাপতির বুক চিঁরে ভাল মাটিতে গেঁথে যায়। অন্যদিকে মুঘলদের নেতৃত্বকারী বেহলল খানকে ঘোড়া সমেত দু-টুকরো করে দেন মহারান প্রতাপ।
ইংরেজদের থেকে ভারতকে স্বাধীন করার পেছনে যেভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সম্মান দেওয়া উচিত, সেই একই সন্মান মহারানা প্রতাপের মতো মহান রাজারও প্রাপ্ত। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতার নামে পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে যে ছাত্র সমাজকে মহারানা প্রতাপের নাম পর্যন্ত পড়ানো হয় না বলে অভিযোগ উঠে। আজ মহারানা প্রতাপের জন্ম জয়ন্তীতে উনাকে জানায় কোটি কোটি প্রণাম।
বাংলার কথা বললে, বঙ্গভুমিকে অনেক মহান হিন্দু রাজা শাসন করেছন। কিন্তু বাঙালিদের শুধু সিরাজউদ্দৌলা থেকে পড়ানো হয় বলে অভিযোগ উঠে। বলা হয় বাংলায় শাসন করা বীর রাজা মহারাজ প্রতাপাদিত্য এর মতো রাজদের ইতিহাস বাদ দিয়ে শুধুমাত্র বিদেশী আতঙ্কবাদী মুঘলদের চরণবন্দনা করা হয়।
from India Rag https://ift.tt/2L9QwjQ
Bengali News