আক্রমণের লক্ষ্য একজনই। আর তা করে কোণঠাসা করার চেষ্টা দিনভর চালিয়ে গেলেন অনেকেই। প্রসঙ্গ বিভিন্ন হলেও রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করে সুর চড়ালেন সুষমা স্বরাজ, স্মৃতি ইরানি, যোগী আদিত্যনাথ থেকে আনন্দীবেন প্যাটেলরা। আরএসএসে হাফ প্যান্ট পরা মহিলাদের দেখেছেন কি না, সেই প্রশ্ন রাহুল গান্ধী প্রথমে তোলেন। আর তার জবাব দিতে গিয়ে সমালোচনার ঝাঁঝ আরও বাড়িয়ে কংগ্রেস সহ-সভাপতিকে সরাসরি বিঁধেছেন বিজেপি নেতারা।আরএসএসে হাফ প্যান্ট পরা মহিলাদের দেখা যায় না। কংগ্রেস সহ-সভাপতি এমন মন্তব্য করায় আসরে নামেন বিদেশমন্ত্রী। শনিবার আহমেদাবাদে দলীয় সভায় কোনও রাজনীতিকের মুখে এমন কথা শোভা পায় না বলে সুর চড়াতে শুরু করেন সুষমা স্বরাজ। তিনি বলেন, “রাহুল গান্ধী যদি কেন আরএসএসে মহিলাদের হাফ প্যান্ট পরতে দেওয়া হয় না প্রশ্ন তুলতেন, নিশ্চয়ই জবাব দিতাম। কিন্তু যে অশালীন ভাষা তিনি প্রয়োগ করেছেন, তাতে তাঁর কথার কোনও উত্তরের প্রত্যাশা করা উচিত বলে মনে করি না।” বিজেপিকে মহিলা-বিরোধী দল, এমন অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন সুষমা। তিনি বলেন, বিজেপিই চারজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী, চারজন রাজ্যপাল দিয়েছে। বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ছ’জন মহিলা মন্ত্রী আছেন।” আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি রাহুলকে বলেন, “মহিলাদের সম্মান করতে শিখুন।” গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন প্যাটেলের বক্তব্য, “কংগ্রেস কি মহিলারা কী পোশাক পরেন, সেটাই শুধু জানতে আগ্রহী?”বিশ্বে ক্ষুধা সংক্রান্ত সাম্প্রতিক রিপোর্টে ভারতের জায়গা নিয়ে অস্বস্তিতে ফেলে মোদি সরকারকে। আর তার সমালোচনা করতে গিয়ে সুর চড়ান কংগ্রেস সহ-সভাপতি। আর তার পাল্টা কটাক্ষ করতে গিয়ে স্মৃতি ইরানি টুইট করেন। ব্যঙ্গ করে তিনি লেখেন, “দেশের সম্মান রাখার চেষ্টা তো করুন।” বাদ যাননি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও। শনিবার গুজরাতের ভালসাদে এক জনসভায় তিনি বলেন, “কংগ্রেস উন্নয়নের প্রতীক নয়। বরং ধ্বংসের প্রতীক। যে ব্যক্তি (পড়ুন রাহুল গান্ধী) নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র অমেঠিতে একটি কালেক্টরেট অফিসও তৈরি করতে পারেননি, তিনি কী করে গুজরাতের উন্নয়ন করবেন বলে আশা করেন?” গত ৭০ বছরে ক্ষমতায় থেকেও উন্নয়ন কংগ্রেস করতে পারেনি বলে অভিযোগ করেন আদিত্যনাথ। তিনি বলেন, “নিজেদের ও পরিবারের কয়েকজনের উন্নয়নের কথা ছাড়া আর কিছু ভাবেননি তাঁরা। তাঁরা যদি উন্নয়ন করতেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কেন আমেদাবাদ ও মুম্বইয়ের মধ্যে বুলেট ট্রেন চালু করতে হল?”কিন্তু, কেন এই রাজনৈতিক বাদানুবাদ? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিকে রাহুল গান্ধী আর কয়েকদিন পরেই দলের সভাপতির পদে বসতে চলেছেন। তার আগে আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়ে কর্মীদের চাঙ্গা করে ভোটমুখী হিমাচলপ্রদেশ থেকে গুজরাতে ফায়দা তোলার চেষ্টা করেন তিনি। আর সেই পথে কাঁটা ছড়াতে সুষমা স্বরাজদের মতো নেত্রীদের নামিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে রাহুলকে প্রথমেই ধাক্কা দিতে মরিয়া বিজেপি শিবির।
‘রাজনীতিক’ রাহুলের মুখে এমন কথা শোভা পায় না, বললেন সুষমা
