নয়া দিল্লিঃ সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর (Border Security Force) ৬৭৪টি স্নিফার ডগ (sniffer dog) সীমান্তে (Border) নজরদারি করার জন্য কোটি কোটি টাকা দিয়ে লাগানো প্রযুক্তিকে হার মানিয়ে দিয়েছে। ঘন জঙ্গল হোক আর জলাভূমি বা ঘন কুয়াশা যেখানে দশ মিটার দূরে কিছু দেখা যায় না, সেখানে BSF-র স্নিফার ডগ কামাল দেখায়। সীমান্ত নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত বহু মামলায় বহুবারই বিএসএফের কুকুর অনেক কিমি ধাওয়া করে চোরাচালানকারী আর অনুপ্রবেশকারীদের ধরতে সাহায্য করেছে।
কোনো চোরাকারবারীর জিনিসপত্র যেমন রুমাল, গামছা, চপ্পল, ম্যাচ বা লাইটার ইত্যাদি সীমান্তে ফেলে রাখলে এই স্নিফার ডগরা দুই থেকে তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে অভিযুক্তকে খুঁজে বের করে। ঘ্রাণশক্তির জোরে অভিযুক্তদের বাড়ির বাইরে বসে থাকে এসব কুকুর। এরপর নিরাপত্তা বাহিনী বুঝতে পারে অভিযুক্তরা এখানে থাকে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে বিষয়টি সত্য প্রমাণিত হয়।
বিএসএফের ডিজি পঙ্কজ সিং বলেন, সীমান্তের এমন কিছু এলাকা রয়েছে যেখানে বেড়া দেওয়া সম্ভব নয়। পাহাড় হোক, জলাভূমি হোক বা নদী নালা, অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি যত্ন নিতে হবে। নজরদারির জন্য সীমান্তে কারিগরি যন্ত্রপাতি বসানো হচ্ছে। স্মার্ট বেড়ার মধ্যে রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, বুলেট ক্যামেরা, কমপ্রিহেনসিভ ইন্টিগ্রেটেড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিআইবিএমএস), নজরদারি ড্রোন এবং অন্যান্য প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম। কখনো কখনো কুয়াশা এত বেশি থাকে যে দশ মিটার দূরে কোনো বস্তু দেখা যায় না। এক্ষেত্রে নিরাপত্তার বৃত্ত ভেঙ্গে যেতে পারে। তা ভাঙতে কুকুরের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। পঙ্কজ সিং-র মোট, কুকুরগুলি দুর্দান্ত কাজ করেছে। আবহাওয়া যাই হোক না কেন, এই স্নিফার ডগরগুলি চোরাকারবারী, অনুপ্রবেশকারী বা অন্যান্য অপরাধী উপাদান ধরতে সহায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে।
অভিযুক্তের বাড়িতে পর্যন্ত পৌঁছে যায় বিএসএফের স্নিফার ডগ। সীমান্তে পাচারের চেষ্টা করা মানুষের কোনো জিনিসপত্র যদি পড়ে থাকে, তাহলে এই কুকুররা সেই সূত্র ধরে তাদের হদিস খুঁজে পায়। ডিজি পঙ্কজ সিং বলেছেন যে পাঞ্জাবের সীমান্তের কাছে একজন চোরাকারবারীর কাপড় ফেলে পালিয়েছিল। সে সীমান্ত এলাকায় থাকত। স্নিফার ডগ সেই কাপড় শুঁকে দুই-তিন কিলোমিটার দূরে গ্রামে চোরাকারবারীর বাড়ি দেখতে পায়। কুকুরটি চোরাকারবারীর বাড়ির বাইরে বসেছিল। এরপরই শুরু হয় তদন্ত। মামলাটি সত্য বলে প্রমাণিত হয়।
স্নিফার ডগদের সাহায্যে এরকম কয়েক ডজন মামলার সমাধান করা হয়েছে। স্নিফার ডগদের বড় সুবিধা হল তাদের সাহায্যে ঝড়, বৃষ্টি, কুয়াশা এবং তুষারপাতের মতো খারাপ আবহাওয়ায় সীমান্তে সন্দেহজনক কার্যকলাপ সনাক্ত করা যায়। লাইভ রেকর্ডিংয়ের জন্য স্নিফার কুকুরের গলায় একটি ক্যামেরাও লাগানো হয়েছে। এর জন্য ক্যামেরার মাধ্যমে স্পষ্ট ভিডিও তৈরি করার জন্য কুকুরকে কীভাবে দাঁড়াতে হবে, কোন দিকে, কতটা হাঁটতে হবে ইত্যাদি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
বিএসএফ-এর গোয়ালিয়রের ন্যাশনাল ডগ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে বিভিন্ন প্রজাতির কুকুরদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে জার্মান শেফার্ড, ল্যাব্রাডর, গোল্ডেন রিট্রিভার, ডোবারম্যান পিনশার, ক্রোকার স্প্যানিয়েল এবং বেলজিয়ান মেলানোইস ইত্যাদি। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সীমান্তে এসব কুকুর নিযুক্ত করা হয়েছে। তারা জওয়ানদের সঙ্গে টহল দেয়। তাদের বিস্ফোরক পদার্থ থেকে যেকোনো ধরনের সন্দেহজনক বস্তু শনাক্ত করতে শেখানো হয়। ন্যাশনাল ডগ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে কুকুরদের তিন সপ্তাহ থেকে ৩৬ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত নেপাল, বাংলাদেশ, ভুটান, সেশেলস, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার এবং মরিশাসের কুকুরকে বিএসএফ প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
The post কোটি কোটি টাকা প্রযুক্তিকেও হার মানাচ্ছে BSF-র স্নিফার ডগ, বাড়িতে গিয়ে ধরছে চোরাকারবারীদের first appeared on India Rag .from India Rag https://ift.tt/3odDQfV
Bengali News